নামাজ ভঙ্গের ১৯ টি কারণ
আল্লাহ তাআলা তার মুসলমান বান্দাদের উপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করে দিয়েছেন। এই নামাজ সঠিকভাবে আদায়ের যেমন অনেক নিয়মকানুন আসে ঠিক তেমনি নামাজ ভঙ্গেরও ১৯ টি কারণ রয়েছে। আমরা অনেকেই এই নামাজ ভঙ্গের ১৯ টি কারণ সম্পর্কে জানিনা। প্রিয় পাঠক বৃন্দ আজকের এই পোস্টে নামাজ ভঙ্গের ১৯ টি কারণ সম্পর্কে আলোচনা করব-
মৃত্যুর পর আল্লাহ তায়ালা সর্বপ্রথম তার বান্দাদের কাছ থেকে যে হিসাব চাইবেন সেটি হল নামাজ। তাই আমাদের সকলকে সঠিকভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে গিয়ে আদায় করতে হবে। আমরা নামাজের মধ্যে ভুলবশত এমন কোন কাজ করে ফেলি যার দ্বারা নামাজ ভঙ্গ হওয়ার ভয় থাকে। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা নামাজ ভঙ্গের কারণ গুলো। আমরা এমন অনেক কাজ করে ফেলি যার দ্বারা নামাজ ভঙ্গ হয়ে যায় কিন্তু আমরা বুঝতেই পারি না বিষয়টা, আর এর কারণ হচ্ছে আমরা নামাজ ভঙ্গের যে ১৯ টি কারণ রয়েছে সেটি সম্পর্কেই জানি না। তাই প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা আপনাদের সকলের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে আজকের এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য।
পেজ সূচিপএঃ নামাজ ভঙ্গের ১৯ টি কারণ
নামাজ কি
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ রয়েছে কালেমা, নামাজ, রোজা, হজ্ব ও যাকাত। আল্লাহ তায়ালার কাছে সবচেয়ে পছন্দনীয় ইবাদত হচ্ছে নামাজ। একজন ব্যক্তির ঈমান আনার পর তার সর্বপ্রথম কাজ হচ্ছে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা। আল্লাহ তাআলা দৈনিক ৫বার তার বান্দাদেরকে আযানের মাধ্যমে মসজিদের দিকে ডাকেন। আর এটি হল নামাজ।
নামাজের গুরুত্ব
আল্লাহ তাআলার কাছে নিঃসন্দেহে সবচেয়ে পছন্দনীয় একটি ইবাদত হচ্ছে নামাজ। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার প্রিয় উম্মতের জন্য আল্লাহ তাআলার কাছ থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ উপহার হিসেবে নিয়ে আসেন। আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সাঃ) তার উম্মতদেরকে সবসময় নামাজের জন্য তাগিদ দিতেন এমনকি তিনি তার মৃত্যু শয্যায়ও নামাজের কথা তার উম্মতদেরকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
এ থেকে বোঝা যায় আল্লাহ তাআলার কাছে নামাজ কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং আল্লাহ তায়ালা এই নামাজকে কতটুকু পছন্দ করেন। যে ব্যক্তি দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে আল্লাহ তা'আলা তার জন্য দুনিয়ার সবকিছু সহজ করে দেন এবং আখিরাতে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য উত্তম পুরস্কারের ব্যবস্থা করে রেখেছেন।
তাই প্রিয় মুসলমান ভাই ও বোনেরা আমাদের সকলকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে গিয়ে জামাতের শহিত আদায় করতে হবে। মনে রাখবেন মৃত্যুর পর ধন-সম্পদ, টাকা-পয়সা, বাড়ি-গাড়ি কিছু নিয়ে যেতে পারবেন না শুধুমাত্র একটি কাফনের কাপড় ছাড়া আপনাকে কিছুই দেওয়া হবে না আপনার সঙ্গে শুধু যাবে আপনার নেক আমল। তাই আমরা যে যেখানেই থাকি না কেন আর যে কাজেই ব্যস্ত থাকি না কেন আমাদের সকলের উচিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নিয়মিত আদায় করা।
নামাজ ভঙ্গের ১৯ টি কারণ
ভুলবশত বিভিন্ন কারণে আমাদের নামাজ ভঙ্গ হয়ে যায়। নামাজ ভঙ্গের ১৯ টি কারণ সম্পর্কে আপনার সঠিক ধারণা থাকলে তাহলে আপনি ভবিষ্যতে নামাজ ভঙ্গের কারণগুলো এড়িয়ে চলতে পারবেন। তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে চলুন জেনে নেই নামাজ ভঙ্গের ১৯ টি কারণ-
১. নামাজের ভেতর কথা বলা
২. নামাজে অশুদ্ধ পাঠ করা
৩. কোন লোককে সালাম দেওয়া
৪. সালামের উত্তর দেওয়া
৫. বিনা কারণ ছাড়া কাশি দেওয়া
৬. উহঃ আহঃ শব্দ করা
৭. বিপদে কিংবা বেদনায় শব্দ করে কাঁদা
৮. আমলে কাছীর করা
৯. মুক্তাদি ব্যতীত অন্য কোনো ব্যাক্তির লুকমা নেওয়া
১০. সুসংবাদ বা দুঃসংবাদ এর উত্তর দেওয়া
১১. তিন তাসবীহ পরিমাণ সতর খুলে থাকা
১২. নামাজে কোরআন শরীফ দেখে পড়া
১৩. কিবলার দিক হতে সীনা ঘুরে যাওয়া
১৪. নাপাক জায়গায় সিজদা করা
১৫. নামাজের ভেতর উচ্চস্বরে হাসা
১৬. হাচিঁর উত্তর দেওয়া বা জবাবে
“ইয়ারহামুকাল্লাহ্” বলা
১৭. নামাজে দুনিয়াবি কোন কিছু চিন্তা করা
১৮. নামাজে কোন কিছু খাওয়া বা পান করা
১৯. ইমামের আগেই মুক্তাদী দাঁড়িয়ে যাওয়া
শেষ কথাঃ আমরা যদি কেউ উপরে উল্লেখিত নামাজ ভঙ্গের ১৯ টি কারণের মধ্যে কোন একটিও করে থাকি তাহলে আমাদের উচিত আজ থেকে সেগুলো পরিত্যাগ করা। আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্ট লাভের আশায় সঠিক এবং পরিপূর্ণভাবে বিনয়ের সাথে এবং মসজিদে গিয়ে জামাতের সাথে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা আমাদের সকলের কর্তব্য।